স্বাস্থ্যকর খাদ্য সম্পর্কে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ

স্বাস্থ্যকর খাদ্য সম্পর্কে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নিলে আপনি আপনার সুস্থ থাকার অর্ধেক কাজ করে নিলেন । বাকি অর্ধেক পূর্ণ হবে যদি আপনি এই পরামর্শটা আপনার বাস্তব জীবনে কাজে লাগান। আপনি সুস্থ থাকার জন্য সকালে কতটুকু নাস্তা করবেন । কি নাস্তা করবেন , প্রতিদিন কতটুকু শাক-সবজি খাবেন,  কতটুকু পানি পান করবেন 

 
স্বাস্থ্যকর খাদ্য সম্পর্কে  পুষ্টিবিদদের পরামর্শ

আপনার ওজন কতটুকু হওয়া উচিত বয়স অনুযায়ী ইত্যাদি।  সব বিষয়ই পুষ্টিবিদদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে বা চলা উচিত । তাহলেই আপনি সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবেন । এই আর্টিকেলে আপনি এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।  চলুন তাহলে আমরা শুরু করি- 

পোস্ট সূচিপত্র : স্বাস্থ্যকর খাদ্য সম্পর্কে  পুষ্টিবিদদের পরামর্শ

স্বাস্থ্যকর খাদ্য সম্পর্কে  পুষ্টিবিদদের পরামর্শ

স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সঠিক পুষ্টি আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে, রোগ প্রতিরোধ করতে এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক। পুষ্টিবিদরা আমাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন যা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এই আর্টিকেলে আমরা তাদের কিছু মূল পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করবো- 

  • রঙ্গিন ফল ও রঙিন শাক সবজি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে বয়স অনুযায়ী পানি পান করুন
  • স্বাস্থ্যকর ফ্যাট গ্রহণ করুনগোটা শস্য ও প্রোটিন গ্রহণ করুন
  • অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন
  • পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করুন
  • সঠিক সময়ে খাবার খান
  • অতিরিক্ত চিনি ও লবণ পরিহার করুন

  বিভিন্ন ধরনের খাবার খান

পুষ্টিবিদরা বলেন, আমাদের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন: 

  • শাকসবজি : পালং শাক, গাজর, ব্রোকলি, টমেটো ইত্যাদি।
  • ফল : আপেল, কলা, কমলা, বেরি ইত্যাদি।
  • সিদ্ধ শস্য : ব্রাউন রাইস, ওটস, কোয়িনোয়া ইত্যাদি।
  • প্রোটিন : মুরগির মাংস, মাছ, ডাল, বাদাম ইত্যাদি।

স্বাস্থ্যকর খাদ্য সম্পর্কে  পুষ্টিবিদদের পরামর্শ

 প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন

পুষ্টিবিদদের মতে, প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন ফাস্ট ফুড, কোমল পানীয় এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার এড়ানো উচিত। এই ধরনের খাবারে সাধারণত উচ্চ ক্যালোরি এবং কম পুষ্টি থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

পানি আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য। পুষ্টিবিদরা প্রতিদিন অন্তত -১০ গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দেন। পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, পুষ্টি উপাদান পরিবহন করে এবং দেহের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।

বয়স অনুযায়ী পানি পানের তালিকা 

বয়স ছেলেদের প্রয়োজন মেয়েদের প্রয়োজন
৯-১৩ বছর ১.৬ লিঃ ১.৪ লিঃ
১৪-১৮ বছর ১.৯ লিঃ ১.৬ লিঃ
১৯-৫০ বছর ২.৬ লিঃ ২.১ লিঃ
৫১+ বছর ২.৭ লিঃ ২.২ লিঃ

সঠিক পরিমাণে খাবার খান

খাবারের পরিমাণও গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিবিদরা বলেন, খাবার গ্রহণের সময় সঠিক পরিমাণে খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করলে ওজন বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। খাবার গ্রহণের সময় মনোযোগী হওয়া এবং ধীরে ধীরে খাওয়া উচিত।

হেলদি স্ন্যাকস রাখুন
অনেকেই মাঝে মাঝে স্ন্যাকস খেতে পছন্দ করেন। পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন, স্ন্যাকস হিসেবে স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নিতে পারেন । যেমন:
স্বাস্থ্যকর খাদ্য সম্পর্কে  পুষ্টিবিদদের পরামর্শ

 ফল : আপেল বা কলার টুকরা।
বাদাম : কাঁচা বা রোস্টেড বাদাম।
দই : প্রাকৃতিক দই, যা প্রোবায়োটিক উপাদানে সমৃদ্ধ।
বীজ  ঃ সূর্যমুখী বীজ , কুমড়ো বীজ ইত্যাদি। 

 নিয়মিত খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলুন

পুষ্টিবিদরা বলেন, নিয়মিত সময়ে খাবার গ্রহণ করা উচিত। এটি শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে এবং অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তিন বেলা খাবারের পাশাপাশি ছোট ছোট স্ন্যাকসও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

শর্করা এবং চর্বির সঠিক উৎস বেছে নিন

শর্করা এবং চর্বি আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়, তবে সঠিক উৎস থেকে গ্রহণ করা উচিত। পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন:শর্করা: সাদা রুটি বা পাস্তার পরিবর্তে ব্রাউন রুটি বা পুরো শস্যের খাবার বেছে নিন।চর্বি: স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল এবং ওমেগা- ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ খান।

মানসিক স্বাস্থ্যকেও গুরুত্ব দিন

স্বাস্থ্যকর খাদ্য কেবল শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেও গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিবিদরা বলেন, স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমাতে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা উচিত। যেমন:মাছ: ওমেগা- ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। ডার্ক চকলেট: এটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

 উপসংহার

স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা আমাদের জীবনযাত্রার একটি অপরিহার্য অংশ। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুসরণ করে আমরা আমাদের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে পারি। সঠিক খাবার নির্বাচন, নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা আমাদের সুস্থ সুখী জীবনযাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা একটি দীর্ঘ স্বাস্থ্যকর জীবন উপভোগ করতে পারি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ভেনাসম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url